বাহলুল নামে এক পাগল ছিল। যে অধিকাংশ সময়
কবরস্থানে কাটাতো। কবরস্থানে থাকা অবস্থায়
একদিন বাদশাহ হারুনুর রশীদ তার পাশ দিয়ে
যাচ্ছিলেন.....
বাদশাহ তাকে ডাক দিলেন: বাহলুল! ওই পাগল! তোর
কি আর জ্ঞান ফিরবে না?
বাহলুল বাদশাহর এ কথা শুনে নাচতে নাচতে গাছের
উপরের ডালে চড়লেন এবং সেখান থেকে ডাক দিল:
হারুন! ওই পাগল! তোর কি কোনদিন জ্ঞান
ফিরবেনা?
বাদশাহ গাছের নিচে এসে বাহলুলকে বললেন, আমি
পাগল নাকি, তুই যে সারাদিন কবরস্থানে বসে
থাক ? বাহলুল বলল, আমিই বুদ্ধিমান..!
বাদশাহ: কীভাবে.......?
বাহলুল রাজপ্রাসাদের দিকে ইঙ্গিত দিয়ে বললেন:
আমি জানি এই রঙ্গীলা দালান ক্ষণিকের
আবাসস্থল, এবং এটি (কবরস্থান) স্থায়ী নিবাস;
এজন্য আমি মরার পূর্বেই এখানে বসবাস শুরু করেছি।
অথচ তুই গ্রহণ করেছিস ঐ রঙ্গশালাকে আর এই
স্থায়ীনিবাসকে (কবর) এড়িয়ে চলছিস। রাজপ্রসাদ
থেকে এখানে আসাকে অপছন্দ করছিস! যদিও তুই
জানিস এটাই তোর শেষ গন্তব্য! এবার বল, আমাদের
মধ্যে কে পাগল........?
বাহলুলের মুখে এ কথা শোনার পর বাদশাহর অন্তর
কেঁপে উঠল, তিনি কেঁদে ফেললেন। তাঁর দাড়ি ভিজে
গেল।
তিনি বললেন: আল্লাহ'র কসম! তুমিই
সত্যবাদী। আমাকে আরও কিছু উপদেশ দাও!
বাহলুল: তোমার উপদেশের জন্য আল্লাহর কিতাবই
যথেষ্ট। তাকে যথার্থভাবে আকড়ে ধর।
বাদশাহ: তোমার কোন কিছুর অভাব থাকলে আমাকে
বল, আমি তা পূরণ করব।
বাহলুল: হ্যা, আমার তিনটি অভাব আছে, এগুলো যদি
তুমি পূরণ করতে পার তবে সারা জীবন তোমার
কৃতজ্ঞতা স্বীকার করব।
বাদশাহ: তুমি নিঃসঙ্কচে চাইতে পার।
বাহলুল: মরণের সময় হলে আমার আয়ূ বৃদ্ধি করতে হবে।
বাদশাহ: আমার পক্ষে সম্ভব নয়।
বাহলুল: আমাকে মৃত্যুর ফেরেশতা থেকে রক্ষা করতে
হবে।
বাদশাহ: আমার পক্ষে সম্ভব নয়।
বাহলুল: আমাকে জান্নাতে স্থান করে দিতে হবে
এবং জাহান্নাম থেকে আমাকে দূরে রাখতে হবে।
বাদশাহ: আমার পক্ষে সম্ভব নয়।
বাহলুল: তবে জেন রাখ, তুমি বাদশাহ নও বরং তুমি
অন্য কারও অধীনস্থ।
অতএব তোমার কাছে আমার কোন চাওয়া বা
প্রার্থনা নেই।
"প্রত্যেক প্রাণীকেই মৃত্যুর স্বাদ গ্রহণ করতে
হবে" (সূরা আল-ইমরান, আয়াত - ১৮৫)
...................জাজাকুমুল্লাহু খাইরান................!!!?
0 Comments